স্বভাব যায় না মরলেও
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৯ অক্টোবর, ২০১৪, ০৫:২০:৫১ বিকাল
'... পিপড়েরা আগে এমন চোর ছিল না। প্রথম দিকটায় তারা মানুষের মতই ব্যবহার করতো। মানুষের মতই চাষবাস করতো এবং সৎ জীবন-যাপন করতো। কিন্তু তারা নিজেদের পরিশ্রমলব্ধ জিনিসে সন্তষ্ট না থেকে লোভে পড়ে অপরের দ্রব্য চুরি করতে শুরু করল।
দেবতা জিউস তাদের এই মতিগতি দেখে তাদেরকে - আমরা এখন যে ছোট ছোট পিঁপড়ে দেখি সেই ক্কীট এ পরিণত করলেন।
পিঁপড়েদের দেহ পালটে গেল। তবুও তাদের স্বভাব পাল্টালো না - এদিকে ওদিকে ঘুরে ফিরে এখনও তারা সেই আগের মতই অপরের শ্রমলব্ধ যব-গমের দানা, চিনি, গুড় সব চুরি করে নিজের বাসায় নিয়ে যায়।" (শাস্তি পেলেও দুর্জনদের স্বভাব বদলায় না- ঈশপের গল্প)
আমাদের দেশেও এই স্বভাব বদলের জিনিসটা খুবই দুর্লভ। যারাই লঙ্কায় গিয়েছে, তারা রাবণে পরিণত হতে দ্বিধা-বোধ করে নাই... কালো বিড়াল ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেই কালো বিড়াল হয়ে বহাল তবিয়তে ক্ষমতায় বসে নির্লজ্জ হাসিতে আমাদের শরীর জ্বালিয়ে দিয়েছে... দিচ্ছে... হয়তো অদূর ভবিষ্যতে দিতেও থাকবে। যা কিছু ভাল-সুন্দর ও সৎ -এগুলো করার শপথ নিয়ে মহান সংসদে গিয়ে ক'জনাই ঠিক রাখতে পারছেন নিজেদেরকে?
এতো গেলো একধরনের মানুষ, যাদের স্বভাব বদল হয়ে যায় পরিস্থিতির চাপে পড়ে। যদিও এদের শুরুটা অনেকেরই ভালো ভাবেই হয়ে থাকে।
আর এক ধরণের মানুষ রয়েছেন, যাদের স্বভাব কখনোই বদলায় না। এরা মারা গেলেও মৃত্যুর আগে নিজের বদ-স্বভাবের রেশ রেখে মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এ প্রসঙ্গে অন্য আর একটি গল্প বলা যেতে পারে-
'... এক বদ লোক এক গায়ের মানুষের জীবনকে অতিষ্ট করে দিতে দিতে প্রায় জীবনের শেষ বেলায় এসে উপস্থিত হল। এখন আর কারো কোনো ক্ষতি করার মত সামর্থ্য তার নাই। সে চিন্তায় পড়ে গেল। কীভাবে মানুষের ক্ষতি করা যায়- না হলে যে ওর শান্তি লাগছে না। শেষে অনেক ভেবে সে একদিন গ্রামের নেতৃত্ব দেয় এমন কিছু লোককে তার বাসায় ডেকে আনল। তাদেরকে সে সরাসরি বলল,
: আমি তোমাদেরকে সারাটি জীবন জ্বালিয়েছি। আমার এখন শেষ সময় উপস্থিত। এখন আমার এমন একটা শিক্ষা হওয়া দরকার, যেটা দেখে আমার মত চরিত্রের যারা রয়েছে, তারা যেন একেবারে ভাল হয়ে যায়।
: তাহলে আমাদেরকে কি করতে হবে এখন? নেতাদের একজন প্রশ্ন করে।
: আমাকে গায়ের চৌরাস্তায় নিয়ে আমার পাছার ভিতরে একটা বাঁশ ঢুকিয়ে দিয়ে না মরা পর্যন্ত রেখে দাও।
সবাই নিজেদের ভিতর অনেক আলাপ-আলোচনার পরে বদ-লোকটির কথা মত কাজ করল। লোকটি মারা যাবার পরে গ্রামে পুলিশ এল... তদন্ত হল এবং লোকটিকে মারার অপরাধে গ্রামের সকল পুরুষদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু হল... যাদেরকে সামনে পেলো অ্যারেস্ট করে নিয়ে গেলো।
তখন গ্রামবাসী বুঝল যে, বদ লোক সব সময়ই বদ থেকে যায়। তার স্বভাবের পরিবর্তন হয় না সাধারণত। আর তার কাছে থেকে কোনো ভালো কিছুও আশা করা যায় না।
যারা এখনও আশা করে আছেন, এ দেশে নতুন ধারার রাজনীতি শুরু হবে... নতুন নেতৃত্ব এসে আমুল পরিবর্তন ঘটাবেন... তাদের সে আশার গুড়ে বালি। ১০০% বালি। কারণ সবাই (অধিকাংশেরও বেশী) পিপড়েতে পরিণত হয়েছে। এখন আর তাদের চুরি না করলে ভাল লাগবে না। আর সব চোরদের ভিতর দু'একজন ভাল মানুষ আর কিইবা করতে পারবেন?
আর বাকী যারা রয়ে গেছেন, তারা ঐ বদ লোকটির মত মানসিকতা নিয়ে আমাদেরকে তথা সাধারণ মানুষদেরকে এক সাথে বিপদে ফেলার ফন্দী-ফিকিরেই ব্যস্ত রয়েছে।
তাহলে উপায় কি?
কোন পথে আমাদেরকে আগাতে হবে?
এই পথ যে খুজবেন, সে রাস্তাটিও নিষ্কণ্টক নয়। মন খুলে কথা বলবেন, তারও কি উপায় রয়েছে। আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খবর পড়লাম, কোনো এক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাকি নিজে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দু'জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এরা নতুন তথ্য আইনের আওতায় পড়ে গেছে। একজন খুবই বিখ্যাত ব্যক্তিকে নিয়ে মোবাইলে ব্যঙ্গাত্বক গান না এ জাতীয় কিছু একটা শুনছিলেন।
তাই বলছিলাম, নিজের মনে মনে যা রয়েছে সেটা কোনোভাবেই যেন প্রকাশ না পায়। নিজ স্বদেশে এক আমরা পরবাসী যেন। ঠোঁট কে একেবারে সিলাই করে রাখলে ভালো হবে বোধহয়। কারন আপনার কথা কোত্থেকে কোন ধারায় পড়ে যাবে? আর জানেন তো, দেয়ালেরও কান আছে।
অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে চলেছে স্বেচ্ছাচারিতার নির্যাতন!
এখন সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসব রুখে দিতে হবে, স্থানীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ কিছু সাহসী মানুষই পারে এ নোংরা-প্রাবন ঠেকাতে!
আপনি আমি কি প্রস্তুত আছি তাদের পাশে দাঁড়াতে?
আগামীকালই কিন্তু আমার নির্যাতিত হবার পালা!! [ এই অংশটুকু ব্লগার আবু সাইফ ভাইয়ের লিখা। আমি কেবলমাত্র সংযোজন করেছি। ক্রেডিট তার জন্য। দায় আমার। ]
বিষয়: বিবিধ
১২৭০ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।
সহমত আপনার সাথে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সুন্দরের অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমাদের শুরুটা যদি ভুল হয় তাহলে সেটা শুদ্ধ করা যায় না।
যে রাজনীতি নিযে কথা বলছেন - সেগুলোর গোড়ায় গলদ।
আপনাকে ধন্যবাদ।
কিন্তু এই গলদ সারাবার জন্য আদৌ আমরা কিংবা অন্য কেউ অথবা নিয়মতান্ত্রিক কোনো গোষ্ঠী কিছু করার চেষ্টা করছি কি? না করলে কিভাবে শুরু করা উচিত? এই প্রশ্নগুলো আমাকে ভাবাচ্ছে।
সুন্দর অনুভূতি রেখে গেলেন, সেজন্য অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ব্লগে সাথে থেকে অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
অনুভূতি রেখে যাবার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম!
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সব পথ জুড়ে তমাশা নেমে-
যখনি গভীর হয় রাতের আধার,
আলোর বলয় ছড়িয়ে তখনি-
আসে নতুন আকাশ সম্ভাবনার!!
ভেংগে পড়া মানে হেরে যাওয়া।
এখনি জাগতে হবে সবাই কে......
খুব নান্দনিক মন্তব্যে আমি অভিভূত!!
সবাই জেগে উঠুক এই প্রত্যাশাই করছি।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
কিন্তু আমিই যে 'হারা'দের দলে......!
শুরুতেই শেষ হয়ে হয়ে যাচ্ছি আমি।
আল্লাহপাক সব ঠিক করে দিবেন ইনশা আল্লাহ।
এ অংশুটুকু খুবই ভালো লাগলো-
কিন্তু-
সমাপ্তির পিঁপড়েটা সব গুড় খেয়ে ফেলেছে মনে হলো
সমাপ্তিটা এমনও তো হতে পারতো-
দৃষ্টি তোমার খুলে রাখো বিশ্বস্রষ্টার জন্য
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
অনেক ধনবাদ আপনাকে।
আপনার নির্দেশিত শেষাংশটুকু অনেক ভালো লাগলো।
এটুকু কি লিখায় জুড়ে দিবো?
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সংযোজন করেছি।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মনে পড়ে গেল পল্লীকবি জসিমউদ্দীনের
"জামাই উনিই- তবে চাদরটা আমার"
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনাকে মুবারকবাদ
আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম!
ধন্যবাদ অনুভূতি রেখে যাবার জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন